সোমবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৮

অনুবাদ

আমাকে এভাবে অনুবাদ করো না
জ্যেতির্ময় মুখার্জি 

জলের ভঙ্গিটাই  এমন
যেভাবে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ঝুঁকেছে বিকেল

স্মাইল প্লিজ
              আর আমাকে
              ফুরিয়ে যাচ্ছো ঘর

  যাওয়ার কি কোনো কথা ছিল?

কি নিষ্ঠুর তুমি শীত
           ছায়া থেকে নেমে

চমৎকার
আমাকে এভাবে অনুবাদ করো না 

রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮

রূপকথা

রূপকথা
শিল্পী গঙ্গোপাধ্যায় 

আমি চাই তাই পাহাড় সেজেছে
আজকে নীল...
আমার জন্য গাছেদের আজ
সবুজ সাজে, লেগেছে ধুম....

আমি দেখি তাই সূর্যটা রোজ
নিজেকে সাজায় আহ্লাদে...
আমি না দেখলে চাঁদটা কিন্তু
সাজতো না ঐ জোৎস্নাতে....

আমার জন্য ফুলেদের ফোটা
আমারি জন্য ঝরে পড়া ...
আমার জন্য কথা রাখে নদী
সাগরের দিকে পথচলা....

আমার জন্য এত আয়োজন
এত খুশিমাখা দিনগুলি...
তবে কেন বলো,ঝরাবো অশ্রু রাখব নিজেকে,  নির্জনে....

তারচেয়ে ভালো, দুঃখ-ব্যথারা
আমাকেই  ছাড়, যাও দূরে ।।


পূর্ণ

পূর্ণ হয়েছে পাত্র
অমৃত বা বিষে
খবরে কাজকি আর?
জানা গেলে কার লাভ
কার ক্ষতে কতটা
প্রলেপ তুমি দেবে

শেষের সে দিনক্ষণ
জানা হয়ে গেলে
কে আর জমিয়ে রাখে
অভিমান বলো?

সাঁতার

সাঁতার
সম্রাট পাল
সাঁতারের কৌশল শিখিয়ে বাবা যখন মাঝ পুকুরে ছেড়ে দিতেন, নাক মুখ হয়ে কিছু জল গলার নীচে নেমে যেত
বাবা দাঁড়িয়ে চেয়ে থাকতেন, ধরতেন না

অফিসের পথে রওনা হবার সময় বাবা এখন চেয়ে থাকেন বারান্দায় বসে।

মায়া

মায়া
সুব্রত ঘোষ



বসে আছি সারাদিন
সারারাত....

যুগের পর যুগ
এভাবেই পেরিয়ে এসেছি মিলনস্থল জন্মভুমি

তবু কেউ ভালোবেসে বিশেষ চুমু দিয়ে গেলো'না আজও 


মাঝে মাঝে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে হয়
তপ্ত রোদের মতো প্রখর হতে হতে
যদি ফিরে আসে সক্ষমতা

তবে তো আমরাই পৃথিবী'র শ্রেষ্ঠ জনসম্পদ


দাঁড়িয়ে আছি
এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবো সহস্র বছর

দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পাথর - মমি
তবুও যদি কাছে না আসো
তাহলে নিশ্চিত উড়ে যাবো পাখিদের মতো 

হাজার কাঁদলেও ফিরে আসবো'না ' মায়া '

সুরভে সৌরভে

সুরভে সৌরভে
অতনু ভুইঁয়া 

চির হরিতে বৃক্ষ তাতে কিছু মিথ্যা কিছু সত্য ফুটেছে।
কেউ বলছে, কেউ শুনছে, চির হরিত বৃক্ষ অবাক চোখে দেখছে।
কারো কারো অনেক তাড়া, এদিক থেকে ওদিক থেকে ফুল কুড়োচ্ছে
অভিশপ্ত এক ফুল অপেক্ষা করে ঝড়ে পড়বে একসাথে।

আকাশ পানে আকাশ খোজে কি হবে
দিনভরা রাত সামনে আসে। 
রাতভরা দিন গতি হারিয়েছে, তারাদের অন্যায় কি খোঁজে বেড়া!   
মিথ্যা সত্য ফুল ঝড়ে পাড়ার উপক্রমে 
চির হরিত বৃক্ষ বারন করল 
বাঁচিয়ে রাখো ফুল, হারিয়ে ফেলো সর্বনা। 

 হুঁশ ভুলে গেছে - পাপ তাড়া করে
ঘেমে শরীর শীতল। 
ফুলের বৃত্ত, ফুল ঝড়ছে 
ছুটে চলি গন্ধে,  'সুরভে সৌরভে' ।  

জীবিতরা

জীবিতরা
অভিজিৎ দাস  

রাতের পাখিরা দম বন্ধ করা তারাদের নেভা-জ্বলা দেখে
রাতের মানুষরা চাঁদ দেখেনা, চাদেও যৌনাঙ্গ দেখে ।

রেল লাইনের ধার ঘেঁষে হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে
হাঁটতে হাঁটতে আড়াল এসে ধরা দেয় প্রেমে, তুমি হাত ধরো সজরে চেপে
চুমু খেতে খাও একটা, বলি, দাঁত ব্রাশ করে মুখ ধুয়ে এসো
এখানে কলগেট নেই, ব্রাশ নেই
বহুকাল খোঁজে পাইনি, চুমুও খাওয়া হয়নি আর

দাঁত ব্রাশ না করেই আমরা একদিন –
সহস্র চুমু খাব ।

তোকে আমি যখন দেখি




তোকে আমি যখন দেখি
ইতিকা বিশ্বাস


তোকে আমি যখন দেখি কি যেন তুই ভাবিস
বলতে পারিস একটু খুলে না হয় আমাকে
নিস্তব্ধ নিঃশ্চুপ কেন হয়ে গেলি
খুব বাড়াবাড়ি করেছি কি আমি তুই বলতিস।

খামখেয়ালি ইচ্ছে মতো কেন তোর পাগলামি
লাজুক চোখে ইশারাতে কেন ডাকিস
ভয় কি পাস আমাকে তুই একটু দেনা বলে
তোর মতো হয়ে বলবো কথা দেখবি আমি।

কেনরে তুই এমন হলি আমার মনের মতো
সারাদিন তাই তোকেই খুঁজি শত কাজের ফাঁকে
হাসাতে তুই যেমন পারিস হাসতে আমি পাড়ি
তাই ঘুমের ঘোরে হেসে ফেলি আমি আমার মতো।

হচ্ছেটা কি নেইকো সাড়া দিচ্ছি তোর পাহারা
বদলে গেছিস এমন করে যায়নারে বোঝা
ধুর বুদ্ধু আবার একটু খামখেয়ালি এদিক ওদিক হলি
আগেই তুই ভালোই ছিলি আমার সাহাড়া।

মা ও আমার বর্ণমালা




মা ও আমার বর্ণমালা
 অসীম মালিক

আমার জন্মভূমির বুক থেকে উঠে আসা
                        নির্লিপ্ত অ আ ক খ ...
                            ম-ম-ম করতে করতে
                                     মা বলে ডেকে উঠলো ।

মায়ের শরীরে ,
বর্ণপরিচয় খুলে বসল ছেলে ।
আঁতুড় ঘর থেকে উঠে এলো
              নক্ষত্রপুঞ্জের মত বর্ণমালা ।

বর্ণগুলি , মায়ের অশেষ স্নেহে
           শব্দ তৈরী করতে করতে
                      ছড়িয়ে পড়ল রোদ্দুরে ...

স্বর্গ ,মর্ত্য ,পাতাল
         ত্রিভুবন ছুঁয়ে ফেলল -
                  ওষ্ঠে ছুঁয়ে বেড়িয়ে আসা ,
                                        মা শব্দটি 

হাসিতে আনন্দিত ,
       কান্নায় দুঃখিত হয়ে
                   পৃথিবীর সমস্ত মাতৃভাষাকে
                               এক সারিতে দাঁড় করাল মা।  

বহ্নিশিখায় ,পুড়ল আমার মায়ের
              রক্ত মাংসের শরীর
                      দুর্বাঘাস হয়ে গজিয়ে উঠলো -
অমর একুশে ফেব্রুয়ারী ,
                 আমার উজ্জ্বল বর্ণমালা।

নশ্বর কথারা




নশ্বর কথারা
 তৈমুর খান


নশ্বর কথারা প্রতিদিন ঝরে পড়ছে

কথাদের আলোর বাজারে

দুর্মুখ বিহ্বল আমি
প্রত্যহ ধাঁধায় ফিরে আসি


যেসব ভালোবাসাগুলি প্রকাশ হয়
অথবা চুম্বনগুলি মেঘের মতো
বৃষ্টি ও রোদে মাখামাখি
তাদের দেখে নিই
আর স্নেহের প্রকাশে
অথবা মরমি কান্নায় সচকিত হই
কথাদের মনে হয় যুবক-যুবতী
যৌবন আকাঙ্ক্ষার নিগূঢ় প্রাচূর্যে

আভাসিত
অথবা ক্লান্তিহীন স্বর্গীয় বিভাস


চারিপাশ জুড়ে কথা
কথারা প্রজাপতি
কল্পনার ঘরদুয়ার জুড়ে তাদের খেলা
সামাজিক শাসনে প্রত্যয়দণ্ড
কখনো কখনো বিদ্রোহ

রোজ ভিজে যাই
উষ্ণ হই
নীরবতায় জাগরণে কথারা যাওয়া আসা করে


রাত হয়ে যায়
বুঝি না কথাদের
কোনো এক গূঢ় ছলনায় তাদের বসতি ।

দেখা




দেখা

সজল কুমার টিকাদার


তোর সঙ্গে দেখা ,বহুদিন পর।
জিজ্ঞাসা করি, 'কেমন আছিস,
তুই তোর মনের ভিতর? '

ভূত দেখার মত তাকিয়ে থাকিস ;
যেন দিন মাস বছর...।
এর মধ্যে নেমে আসে থরে থরে
ফুল,রঙিন বৃষ্টি,আর
অবশেষে পাথর।

মোমবাতির আলোর মত স্বচ্ছ
              শুধু একটু খানি হাসি
ছড়িয়ে কী বলতে চাইলি?
' এখনও ভালোবাসি ? '

ক্রিয়াপদ



ক্রিয়াপদ
 গৌরাঙ্গ মণ্ডল


সমগ্র, তোমাকে জানি। ৯০ ভাগ রিক্ততা নিয়ে
হন্ হন্ শব্দে হাঁটো মুদির দোকান ছেড়ে শব্দহীন চর..

একটার পর আরেকটা অঙ্কের খাতা শেষ করেও
আজ অবধি জল স্থল সমান করতে পারো নি। আর,
পারবেও না কোনোদিন।

একটা অব্যয়ে কখনও সমস্ত জুড়ে দেওয়া সম্ভব!!!
না। বরং স্পষ্ট আরো---- ক্ষয়িষ্ণু অব্যয় যেন
ঝুলন্ত হাইফেন কিংবা সাঁকোর মতোই
জলজ অলিন্দ চিরে হয়ে ওঠে দৃশ্যোজ্জ্বল।
নিজেই। অথচ--

আমরা বুঝতেও পারিনি-- কখন যে ক্রিয়াপদ গুলো
বাক্যে বিশেষ্য ছাড়িয়ে আরেক বিশেষ্য হয়ে গেছে..



পরিমাপ


আগুনে হাঁটছি। দুপাশে কাঁধেরা দগ্ধ,
চোখ বুজে দেখি-----রাষ্ট্রপুঞ্জ গলছে।

আগুনে বৃষ্টি , বৃষ্টি আগুনে বদ্ধ
চাবি গোছা যেন বিভ্রমে কিছু বলছে।

অগ্ন্যুৎপাত স্নিগ্ধ অঝোর দুপুরে
মাঝে মাঝে খসে সান্ত্বনা কিবা বৃষ্টি।

উচ্ছল স্রোতে পৃথিবী ভাসছে পুকুরে,
কিছু জল্পনা যেমন গিলেছে সৃষ্টি।

তুমি তো এঁকেছো আকাশ কুসুম ভাবনা,
উনপাঁজুরের অস্ত্রে ভীষণ রক্ত!

কেনো ডাক দাও অমাবস্যার জ্যোৎস্না?
আদো কি ছিলাম এতোটা শক্তপোক্ত !

ট্রামের গতিকে ভুলের আঙুলে গুনেছো,
বিনিময়ে আমি পূণ্য সকাল মাপিনি।

ভুলচুক ভুলে তুমিতো কবেই বেঁচেছো
মৃত্যুকে ছুঁয়ে, আমিতো এখনও মরিনি।


নিমন্ত্রন



নিমন্ত্রন
সুপ্রীতি বর্মন



সৌররশ্মির গনগনে আঁচে দগ্ধ যৌবনা অন্তর্স্বত্তা,
আলুলায়িত কেশ বিরহ বিবস্ত্র সময়,
 অস্তরীভূত জীবাশ্ম সুখস্মৃতি।
ডাক এসেছে অন্যমনস্ক খোলা চিঠি,
পৌঁছে যেতে চায় নিরুদ্দেশের ঠিকানা।

মুখবন্ধ মুখপাত্র আধার দমবন্ধ হাসিলে,
উন্মুখ খোলা হাওয়া।
একছুটে মুক্ত বিহঙ্গের দিগন্ত প্রসারিত পক্ষ সঞ্চালন।
তীব্র ধুন্দুমার গতি চপলা তনু কম্পমান,
 কতক্ষনে ছুঁয়ে যাবে তোমার পরশ।
দ্বিপ্রহরে মধ্যগগনে দিনমনি রাগে কটমট,
চুল এলোমেলো রৌদ্রদগ্ধ রশ্মি।
বলে এই অসময়ে কেন প্রস্তুতি যাত্রার,
 মন উচাটন,
বাঁধভাঙা উচ্ছাস গতি আমাকে যেতেই হবে অভিসারে।

পূর্বরাগের প্রতিশ্রুতি গাঁটছোলার সীমাহীন দুরত্ব,
মুখভার ঠেলা গোঁজা বাস ট্রাম যানজট,
সময় শুধু বয়ে যায়, কখন যাবো পাবো দেখা একবার।

উরু উরু মন প্রতিস্থাপক,
 অটো ড্রাইভারে ছটফট হাতের আয়ত্তে রাজপথ।
চোখের সমুদ্রে ভাসতে থাকে,
পথঘাট কষ্টকল্পনা স্মৃতি ভাস্বর তুমি।
হঠাৎ থামলো ঘোড়ায় টানা রথ,
পায়ে পায়ে পৌঁছে পাবো নতুন ঘর, তোমার আমার।
আশপাশ নৈশিল মাদকতায় বেসামাল ছুট লাগিয়েছে,
 সব বেমালুম ভুলে শিকেয় তুলে।

সম্মুখে প্রতীক্ষিত আঁখির দিগন্তবিস্তৃত পালকি,
প্রত্যাশায় সঙ্গপানে গোধূলির লাল শাড়ির কুঁচবরন কন্যা প্রেমিকা তোমার,
দ্বিরাগমনে একেবারে ফিরবে,
 না হলে পেছনে থাক ফেলে আসা পথ।

নয়ন সরসী বলাকা ছলছল তুমি এসেছো আমার দ্বারে,
আজ তোমার নিমন্ত্রন অখিল দোলাচালা সমুদ্রে।
একছুটে সহসা আলিঙ্গনে তুমি বাকরুদ্ধ,
 দ্যুতির ঝলকানি হৃদগগনে,
হাতের মাধ্যাকর্ষনে চুম্বকের গতি গর্ভগৃহে।

 সর্বাঙ্গ সিক্ত রৌদ্রদগ্ধ শরীর ছটফট অস্বস্তি,
অন্ধকার অমনিশা মেঘের কোলে চুপিসারে চাঁদের আশ্রয়, জ্যোৎস্নার শীতল বান পড়ে আছড়ে সমুদ্রের বক্ষে,
পরম হিমেল বাতাস অধরা ওষ্ঠ ছুঁয়ে আগমনী নিমন্ত্রন, সার্থকতার উপলব্ধি হৃদয়াঙ্গম।।

ভালবাসা যখন শিকারি



ভালবাসা যখন শিকারি
 জয়ন্ত দত্ত 

ভালবাসা কখনো ভীষণ তুখোড় একগুঁয়ে ।জেদি  অব্যর্থ এক শিকারি যেন!সে একটি বাঘকে ফাঁদে ফেলে মারবার জন্য একটি   ছাগল ছানাকে গাছের তলায় বেঁধে রাখে।আর বাঘ ও শিকারের ডাক শুনে গন্ধে গন্ধে,পা টিপে টিপে এগিয়ে আসে।খানিক চেয়ে দেখে।দেখতে দেখতে খেলতে আরম্ভ করে।একটু খেলা না হলে ভালবাসা ঠিক জমে না।অর্থাৎ পা টিপে টিপে একটু কাছে যাওয়া।আবার পিছিয়ে আসা।প্রদক্ষিণ করা।প্রদক্ষিণ করতে করতে দূরত্বটাকে কমিয়ে নিয়ে আসা।ওত পাতা এবং তারপর এক লাফ।ওদিকে  ভালবাসাও সুযোগ বুঝে বন্দুক তাক  করে দাঁড়িয়ে।তাই লাফ দেওয়ার সাথে সাথেই...




ইঞ্জেকশন

হাসপাতালে জানালা পাশে
দেওদার-পাইন- রোডড্রেনডন সারি
সকাল বেলার মিঠেকড়া মায়াবী রোদ্দুর
কিছু পাখি বসে আছে ডালে
কিছু মেঘ আটকে জানলার গ্রিলে

ওরাই আমায় ওষুধ দিয়ে যায়...

                          


এক পঙক্তির কবিতা


১।  ছোঁয়া যাবে না জেনেও হাতটা বাড়াই...

২।  গুরুত্ব বোঝাতে দূরত্বের প্রয়োজন।

৩।  অনেক সার্টিফিকেট ,তবু শিক্ষিত হতে পারিনি...

৪।  তাঁর চুলের ভাঁজে ,কবিতা বাসা খোঁজে!!

৫।  একগুচ্ছ  গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে আছি মাঝপথে...

 ।  ঘুম হয়ে থেকো চোখে,মন খারাপের রাতে

৭।  এক আকাশ প্রেম দাও --বদলে দেব পৃথিবী

৮।  এক পসলা বৃষ্টিই জানে আমাদের কথা...

৯।  সব কথা বলে না হৃদয়,কিছু বুঝে নিতে হয়

১০।  মন খারাপ অথচ আকাশে একটুও কালো মেঘ নেই!!

১১।  প্রকৃতি ও মেয়ে --দুজনেরই রহস্যের শেষ নেই!

১২।  জানি দেখা হবে রাতের শরীরে ঘুমের ভিতর...

১৩।  নেশা কেটে গেল,সেও হারিয়ে গেল

১৪।  ডাস্টবিনে অসংখ্য জীবন পড়ে থাকে ওদের অশ্লীলতায়...

১৫।  মৃত্যুর কাছে হেরে যায় শত শত আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন!!


                                                             

 জোৎস্না তৃষা


ভালবাসি অনেককে,তবু বলতে পারিনি---ভালবাসো!বিশিষ্ট কবির মত করেও বলা হয়নি কিছু  এতকাল।তীব্র দহন দিনেও কাউকে বলতে পারিনি --হাতটা একটু ধরো প্লিজ!কোনো এক পূর্ণিমা দিনে মধ্যরাতে ঘুম ভাঙিয়ে টানতে টানতে ছাদে নিয়ে গিয়েও কেউ বলেনি --চলো আজ আমরা সারা গায়ে পূর্ণিমা মাখি!বহুদিন অপেক্ষায় থাকার পর হুট করে বেজে ওঠা ফোনেও কেউ জানায়নি --একটা সাদা পাঞ্জাবি পড়ে রেডি হয়ে থেকো।তোমায় নিয়ে বেড়াতে যাবো।জন্মদিনে একগুচ্ছ রজনীগন্ধা হাতে দিয়েও কেউ বলেনি --দীর্ঘায়ু হও, খুব ভাল থেকো।এমনো হয়েছে কোনোদিন।প্রচন্ড জ্বর গায়ে বিছানায় শুয়ে।পাশ থেকে ফিসফিস করে কেউ বলে ওঠে বুঝি --খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার!ওষুধগুলো ঠিক ঠাক খেয়েছো তো!এত বেখেয়ালি হলে চলে?ধড়মড় করে জেগে উঠতেই দেখি কেউ কোত্থাও নেই!আজকাল ভেতরটা কেন জানিনা ভীষণ হাহাকার করে ওঠে।ইচ্ছে হয় আমার জন্য ও কেউ দুফোঁটা চোখের জল ফেলুক।বড় তৃষ্ণা আমার...

রং




রং
অসীম ভুঁইয়া 

ভোরের আলোয় ছিঁড়ে যায় ঘুমের পাতা
জেগে উঠি সন্দিগ্ধ চোখে
আমার আশপাশে লালচে রং
ধীরে ধীরে হয়ে আসে ফিকে।



বেলা

ভুল পথে পা বাড়ানো ,অন্ধকারে হাত
নীল পাখিটার গলার স্বরে মুগ্ধ গোটা রাত
গভীর হলে ঘুম ভেঙে যায়,জানালা দেয় ফুঁ
ভোরের বেলায় একলা পথে নিঃস্ব আলো,ধুধু ।

খন্ডহর




খন্ডহর
  দেবাশ্রিতা চৌধুরী

পরিত্যক্ত খন্ডহর অন্তরমহলে
  ফ‍্যাকাশে সবুজে ছোপছোপ

 কোথাও মৃত্তিকার  কান্না
পাশাপাশি রোদে পোড়া জ্বালা

এইসব অসংখ্য খোপ বহন করে যে কাঠামো

তুমি তাকে প্রাণবন্ত জীব বলো
আমি বলি প্রাণহীন বসতের দায়।

মখমলি সুর্মা জালসাজ আতরের দাগ
নিভৃতচারী ফল্গুধারায় ধুয়েমুছে সাফ

এসব কথারা লিপিবদ্ধ থাকেনি
কোন ইতিহাসের মাহ্ফেজখানায়।।


এক মুহূর্তের ভালোবাসা




এক মুহূর্তের ভালোবাসা
বিসেন লাসেন

এক মুহূর্তের ভালোবাসা
এক মুহূর্তই বড়,
বাবুই পাখির সুখের বাসা
সঙ্গী রোদ বৃষ্টি ঝড়ও।

কাকের জীবন কা কা তে শেষ
কোকিলের চাই বসন্ত,
এক মুহূর্তের ভালোবাসা
সাধনায় হয় অনন্ত ।

এক মুহূর্তের চেনা জানা
এক মুহূর্তেই চাওয়া,
এক মুহূর্তের আশার বাসায়
মনের খবর পাওয়া।

এক মুহূর্তে ফুলের রঙে
অলির রঙিন ফাগুন,
এক মুহূর্তের মরণ ঝড়ে
ফুরাবে না প্রেম আগুন।

ভালোবাসার এক মুহূর্ত
হবে হয় তো কম,
যে পেয়েছে সে জানে প্রেমহীন মুহূর্তে
উইড়া যাবে দম।

মৃত্যুর বুকের 'পরে




মৃত্যুর বুকের 'পরে 
 শংকর দেবনাথ

নক্ষত্রের মৃতদেহ থেকে
            কবিতারা চোখ মেলে
সাংসারিক ধুলোর ভেতর
                ইতস্তত পড়ে থাকা
               আনুবীক্ষনিক প্রেম
অকস্মাৎ মহাকাব্য হয়ে ওঠে...

মৃত্যুর বুকের ‘পরে
                   গন্ধরাজ ফোটে...



ভাবতে ভাবতে শেষ




ভাবতে ভাবতে শেষ
           অমল বিশ্বাস

তুমি ভাবছো; আমি ভাবছি
ভাবতে ভাবতে শেষ,
পথ বাড়ছে; প্রেম কাড়ছে
ইচ্ছে নিরুদ্দেশ।

     জামার পরে জামা,
     কাকে আটকাও!
     রাক্ষুসে শীত; না আহ্লাদী বুক?
     সাধের বোতাম ছিঁড়লে
     কার উচ্ছ্বাস!
     চৌকশ জ্বর; না মৌটুসি সুখ?

     শীতের গায়ে হলুদ,
     কাকে চাচ্ছো?
     পায়ের শিকল; না মুক্ত রোদ?
     লেপ-তোষকের বাসর,
     কার উষ্ণতা?
     শীত নিদ্রা; না যৌবনামোদ?

     মনের সাথে মন,
     শীত পাচ্ছো?

পরিত্যক্ত খন্ডহর অন্তরমহলে
  ফ‍্যাকাশে সবুজে ছোপছোপ

 কোথাও মৃত্তিকার  কান্না
পাশাপাশি রোদে পোড়া জ্বালা

এইসব অসংখ্য খোপ বহন করে যে কাঠামো

তুমি তাকে প্রাণবন্ত জীব বলো
আমি বলি প্রাণহীন বসতের দায়।

মখমলি সুর্মা জালসাজ আতরের দাগ
নিভৃতচারী ফল্গুধারায় ধুয়েমুছে সাফ

এসব কথারা লিপিবদ্ধ থাকেনি
কোন ইতিহাসের মাহ্ফেজখানায়।।


বৃষ্টিকথা




বৃষ্টিকথা
আশিস সরদার

তবু প্রতিরাত স্বপ্নে পোড়াব তোমায়
সে দহন আমাকে দেবে কৃষক সুখ
নবান্ন ঘ্রাণ

সব মানুষের পাতে ভাত পড়বে
সব শিশুর মুখে উথলে উঠবে দুধ পুকুর

তোমার প্রতিটি ছটফট মূহুর্ত
আমাকে দেবে আলোকময়
ছুট

বালিকার শরীরে ফুল ফুটবে
সে সুগন্ধ মেখে
প্রতিটি পুরুষরাত ভোরের
স্বপ্ন আঁকবে

বৃষ্টিকথা উপন্যাসে খোদাই থাকবে
উপসংহারের শেষ লাইনে এসে
তোমার সাথে আমার এই
দেখা হয়ে যাওয়া

অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাবে আগ্নেয়াস্ত্র
ঠোঁটে লটকে থাকবে
চুম্বনের স্বাদ

সব ভাবনা মেলাব দুজন
বুনবো তিন আঙুলে
সম্পর্ক

হাতে হাত রেখে স্লোগান ভাসবে পথ
প্রতিক্ষন ভালবাসা

প্রাচীর ভেঙে এক হয়ে যাবে সব হৃদয়
সব মনের আনাচে কানাচে ঝিলমিল
রোদ

আজ থেকে সব তোমার
যা লিখেছি যা লিখব
আর যা লিখে যেতে পারবনা
এ জীবনে
বৃষ্টিকথা

এলোমেলো





এলোমেলো
     সুপম রায় (সবুজ বাসিন্দা)


তেপান্তরের মাঠ পেরোলাম,
পেরিয়ে এলাম মরুভূমির ক্ষেত ।
অল্প কিছু মেঘ ছুঁয়েছে,
উড়িয়ে দিলাম হাতে অন্ধ রেত ।

লালন সাগর বুকের মাঝে,
নীলচে ঠোঁটে স্পর্শ রাখার ছাপ ।
দু’মুঠো রোদ অন্ধকারে
ঠিক খুঁজে নেয় কালির অভিশাপ । 

কাচের ঘরে বন্দী প্রদীপ,
এলোমেলো রাস্তা হেথায় শেষ ।
পরের দানে খেলবে কে আর !
অল্প জিত আর হারেই আছি বেশ ।